শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবারের তীব্র দরপতনের পর শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ার পুনরুদ্ধার করেছে। লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল যে বছরের শুরুতে ইউরোর দরপতনের জন্য কোন উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল না। তবে, মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতন ন্যায্য হিসেবেই বিবেচনা করা যায়। নতুন ট্রেডারদের জন্য এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে দরপতন শুধুমাত্র সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন বা বড় মৌলিক ইভেন্টের কারণে ঘটে না। যখন কোন প্রবণতা প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন সেই প্রবণতার দিকেই যেকোনো সময় মূল্যের মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, এমনকি রাতের বেলাতেও, কারণ ফরেক্স মার্কেট ২৪/৭ চলমান থাকে।
শুক্রবার, মার্কেটের অস্থিরতা কম ছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন ISM ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন সংক্রান্ত PMI প্রতিবেদনের প্রভাবে খুব বেশি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়নি। এই প্রতিবেদনের প্রভাবে নতুন করে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হতে পারত, কিন্তু তা ঘটেনি। তবে, এটি ডলারের জন্য আরেকটি ইতিবাচক সূচক হিসেবে কাজ করেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইম ফ্রেমে, শুক্রবারে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট তুলনামূলকভাবে দুর্বল ছিল, তবে দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। প্রথমত, এই পেয়ারের মূল্য 1.0269–1.0277 রেঞ্জের উপরে চলে যায় এবং পরে সেখান থেকে রিবাউন্ড করে। উভয় ক্ষেত্রেই, সিগন্যাল তৈরি হওয়ার পরে মূল্য শুধুমাত্র 15–20 পিপস কাঙ্ক্ষিত দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে। এর ফলে, এই বাই ট্রেডগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য লাভ হয়নি। তবে, বাই সিগন্যালগুলো এখনও প্রাসঙ্গিক রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে সোমবার বা মঙ্গলবার ইউরোর মূল্য বাড়তে পারে।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, EUR/USD পেয়ারের মূল্য ছুটিজনিত "ফ্ল্যাট রেঞ্জ" থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং নতুন করে এই পেয়ারের দরপতন শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি যে মধ্যমেয়াদে ইউরোর মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হয়েছে এবং ডলারের বিপরীতে ইউরোর মূল্যের প্যারিটি লেভেলের দিকে পৌঁছাতে খুব বেশি দূরত্ব বাকি নেই। ইউরোর আরও দরপতনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা মার্কিন ডলারকে সমর্থনকারী মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ দ্বারা প্রভাবিত।
তবে, সোমবার এই পেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে, কারণ 1.0269–1.0277 রেঞ্জে দুটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়েছে।
৫-মিনিটের টাইম ফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হল: 1.0156, 1.0221, 1.0269–1.0277, 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0845–1.0851.
সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে সার্ভিসেস বা পরিষেবা সংক্রান্ত PMI এর দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশ করা হবে। এই প্রতিবেদনগুলোর প্রভাবে মার্কেটে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার সম্ভাবনা কম। পাশাপাশি, জার্মানিতে ডিসেম্বর মাসের মুদ্রাস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা কিছুটা বেশি আগ্রহজনক প্রতিবেদন, তবে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়ার জন্য এই প্রতিবেদনের ফলাফলকে পূর্বাভাস থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বিচ্যুত হতে হবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।